মাদরাসা পরিচিতি
নাম:- হযরত শাহ সুলতান রহ. মাদরাসা
(শিশু শ্রেণী থেকে দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত একটি স্বতন্ত্র পুরুষ মাদরাসা)
আল-জামেয়াতুত্ত্বায়্যিবাহ সুলতানপুর মহিলা মাদরাসা
(২ শ্রেণী থেকে দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত একটি স্বতন্ত্র মহিলা মাদরাসা)
ঠিকানা:- সুলতানপুর, গহরপুর, বালাগঞ্জ, সিলেট, বাংলাদেশ।
স্বপ্নদ্রষ্টা পরিকল্পনাকারী, প্রতিষ্ঠাতা ও আমৃত্য মুহতামিম-
মুহিউস সুন্নাহ শায়খ আনওয়ারুল হক চৌধুরী (রহ.) (ইন্তেকাল: ১ জুন ২০২০ ইংরেজী রোজ সোমবার)
বর্তমান মুহতামিম: হযরত মাওলানা রেদওয়ানুল হক চৌধুরী (ছাহেবজাদায়ে মুহিউস সুন্নাহ রহ.)
প্রতিষ্ঠা সন:- ১৯৮২ ইংরেজী
শিক্ষক-শিক্ষিকা:- ৯৭ জন (২০২২-২০২৩)
মোট ছাত্র-ছাত্রী:- ১৫৭৮ জন (২০২২-২০২৩)
আবাসিক ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা:-৬৬৩ (২০২২-২০২৩)
কর্মচারী:- ১১ জন
জমির পরিমাণ- ২ একর ৪০ শতক
ভবন সংখ্যা:- ৩টি। ১টি ৩৫০ফুট লম্বা তিন তলা ভবন, ১টি ১৫০ ফুট লম্বা পাঁচতলা ভবন ও একটি ১৫০ ফুট লম্বা টিনশেড ভবন।
পরিকল্পনাধীন ভবনঃ- আবাসিক ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদা আবাসনের প্রয়োজনে ৬ তলা আনুমানিক ১৮ হাজার স্কয়ার ফিট একটি ভবন তৈরীর পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
আদর্শ:
দারুল উলূম দেওবন্দের সিলসিলাভুক্ত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আদর্শভিত্তিক একটি দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:
১. আহকামে এলাহী ও সুন্নাতে নববী প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তালীম-তারবিয়াতের মাধ্যমে একটি নিষ্টাবান প্রশিক্ষিত জামাত গঠন করে সমৃদ্ধ সুখময় দিশ-জাতি বিনির্মাণে অংশগ্রহণ করা।
২. বিশেষত: মাতৃজাতির মাঝে দ্বীনি শিক্ষার আলো ছড়িয়ে পরিবারকেন্দ্রিক দ্বীনী মূল্যবোধ ও ইসলামী গণজোয়ার সৃষ্টি করা।
৩. আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকীদা-বিশ^াস, ফিকহে হানাফীর সংরক্ষণ এবং দেওবন্দী সিলসিলায় তা’লীম-তরবিয়ত বাস্তবায়ন করা।
৪. ইসলামবিদ্বেষী খোদদ্রোহীদের নিয়মানুযায়ি মোকাবেলা করে নাস্তিকতা, শিরক-বিদআতের মূলৎপাঠনের মাধমে সমাজে সর্বস্তরে ন্যায়-নীতি প্রতিষ্ঠা করা।
৫. ওয়াজ-নসীহত, দাওয়াত ও তা’লীমের মাধ্যমে জনসাধারণের ইসলাহ পূর্বক ইসলামী পূর্ণজাগরণ সৃষ্টি করা।
প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট:-
স্বপ্নদ্রষ্টা, পরিকল্পনাকারী ও প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম মুহিউস সন্নাহ শায়খ আনওয়ারুল হক চৌধুরী রহ.।শত শত বছর থেকে যে পরিবারে ওলী আল্লাহগণ জন্ম নিয়েছেন, যার পিতা, চাচা, দাদাগণও ছিলেন আল্লাহর ওলী, স্নেহময়ী মাতা ছিলেন অত্যান্ত মুত্তাকি আবেদাহ। এমন এক পরিবারে জন্ম নেওয়ার সুবাদের তিনি জন্ম লগ্ন থেকেই দ্বীনী পরিবেশে বেড়ে উঠেন। শিক্ষা জীবনের অধিকাংশ সময় কাটান আপন চাচা ফখরুল মুহাদ্দিসীন, সিলেট আলিয়া মাদরাসা ভূতপূর্ব প্রিন্সিপ্যাল, হাফেজ্জী হুজুর রহ. এর অন্যতম খলীফা মাওলানা লুৎফুল হক চৌধুরী রহ. এর তত্বাবধানে। জন্ম থেকেই তিনি ছিলেন অত্যান্ত মেধাবী, সমঝদার, বিনয়ী। এজন্য অনেক মুরব্বী তাঁকে বলতেন জন্মগত ওলী। সিলেট আলিয়া মাদরাসা থেকে সুনামের সঙ্গে ১৯৫৯ ইংরেজীতে কামিল পাশ করেন। শিক্ষাজীবন সমাপনের পরমুহুর্ত থেকেই তিনি মানুষের মাঝে দ্বীনের আলো বিতরণ করতে রত হন। ওয়াজ-নসীহত, দাওয়াত-তাবলীগের কাজ করতে থাকেন। কিন্তু আশতীত ফল পরিলক্ষিত হচ্ছিল না। শাহ জালাল দরগাহ মসজিদের ইমামতির দায়িত্ব অর্পিত হলে মানুষের অজ্ঞতা ও গোমরাহির দৃশ্য তাকে বারবার ভাবাতে থাকে। তিনি চিন্তা করলেন, এসব অজ্ঞতা ও গোমরাহির পিছনের মূল রহস্য হল মাতৃজাতির দ্বীনি জাহালত। তখন থেকেই মাতৃজাতির সংশোধনের জন্য কিছু একটা করার ফিকির আসে। ১৯৭৯ ইং সনে মুহিউস সুন্নাহ রহ.’র প্রথম সন্তান কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করে। তখনই তাঁর মনে এ চিন্তা প্রকটরূপ ধারণ করে যে আমার মেয়েকে কোথায় পড়া-লেখা করাব? এ নিয়ে দীর্ঘদিন ভাবতে থাকেন। অত:পর ১৯৮২ সনে তারই চাচা ইঞ্জিনিয়ার নমিরুল হক চৌধুরীর উৎসাহে নিজ বাড়ীতে চালু করেন মাদরাসা এবং ১৯৯০ সনে মসজিদের পার্শ্ববর্তী জায়গায় মাদরাসার নিজস্ব ঘরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়।
দাওরায়ে হাদীস:-১৯৯৩ সনে ৫ জনের একটি জামাত দিয়ে শুরু হয় মেয়েদের দাওরায়ে হাদীসের যাত্রা। ১৯৯৩ সন থেকে ২০২২-২৩ ইং শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত দাওরায়ে হাদীস সমাপ্ত করে বের হয় ১৩৪৩ জন আলেমা। চলিত (২০২২-২৩ইং) শিক্ষাবর্ষে দাওরায়ে হাদীসে রয়েছে ১০০ জন।
তাকমীলুল উলূম:- ২০০৭ ইং সন থেকে উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের জন্য চালু করা হয় তাকমীলুল উলূম। চলিত শিক্ষাবর্ষে (২০২২-২৩ইং) এই জামাতে ১৩ জন।
পুরুষ বিভাগ:- ১৯৯৯ ইংরেজী সনে পুরুষ বিভাগে “ফযীলত” জামাত চালু করা হয়। ২০০৭ ইং সন থেকে দাওরায়ে হাদীস চালু করা হয়।চলমান বিভাগ সমূহ:-
(ক) ইবতিদাইয়্যাহ (প্রাথমিক) (খ) মুতাওয়াসসিতাহ (মাধ্যমিক)
(গ) সানাবিয়্যাহ (উচ্চ মাধ্যমিক) (ঘ) ফযীলত (স্নাতক)
(ঙ) তাকমীল (স্নাতকোত্তর)(চ) উচ্চতর শিক্ষা (তাকমীলুল উলূম)
(ছ) হিফজ (ছাত্রদের জন্য কুরআন হিফজ করার ব্যবস্থা)
(জ) শর্ট কোর্স (ঝ.ঝ.ঈ., ঐ.ঝ.ঈ. অথবা ই.অ পাশ মেয়েদের জন্য ৫ বৎসর মেয়াদী মুতাওয়াসসিতাহ থেকে দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত পড়ার ব্যবস্থা)
রমযান মাসে বিশেষ প্রশিক্ষণসমূহ:-
(ক) ক্বিরাআত প্রশিক্ষণ, (খ) সারফ-নাহু, (গ) আরবী,
১৯৯৩ইং সন থেকে মাদরাসাটি বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ (বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড) এর অধীনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আসছে এবং খুব ভাল ফলাফল করছে।২০১৮ সন থেকে আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিয়াতুল কওমিয়া বাংলাদেশ এর অধিনে পরীক্ষা দিচ্ছে।